ঢাকা , রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫ , ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে অর্থনীতি স্থবির হবে না-অর্থ উপদেষ্টা কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীদের ভিড় ঘরমুখো মানুষের ঢল শেরপুরে পাটচাষি সমাবেশ অনুষ্ঠিত বিরলে মতিউর রহমানের মডেল কৃষি বাড়ি দেখতে আসছেন অনেকে কলারোয়ায় তিন ‘স’ মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা কুড়িগ্রামে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে জীবন্ত গরু-ছাগল সিরাজগঞ্জে সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশুর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার নেত্রকোনা সীমান্ত দিয়ে ৩২ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ ঈদ উৎসবে জমজমাট ওয়ালটন ফ্রিজের বিক্রি ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৬০৫২১ জন ক্রিমিয়া রেলসেতুতে ১১০০ কেজি বিস্ফোরক দিয়ে হামলা যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান ইরানের সুদানে গৃহযুদ্ধের কারণে দেশ ছেড়েছেন ৪০ লাখ মানুষ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ৩৬ জনের মৃত্যু মার্কিন অভিনেতা জোনাথন জসকে গুলি করে হত্যা রোমান্টিক সময় কাটাচ্ছেন তাহসান-রোজা দম্পতি কাঁধে কাঁধ মেলালেন শাকিব-নিশো চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেলো তাণ্ডব ‘অপারেশন সিঁদুর’ কল্যাণ জয় পেয়েছে বেঙ্গালুরুর!

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরানোর আবেদন শুনানি ৮ মে

  • আপলোড সময় : ০৩-০৩-২০২৫ ১২:০২:১০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৩-০৩-২০২৫ ১২:০২:১০ পূর্বাহ্ন
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরানোর আবেদন শুনানি ৮ মে
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে রাজনৈতিক দল ও ছয় ব্যক্তির করা চারটি আবেদনের শুনানির জন?্য আগামী ৮ মে দিন নির্ধারণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গতকাল রোববার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এর আগে, ২০১১ সালের ৬ এপ্রিল এ আপিলের ওপর শুনানি গ্রহণ শেষে বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখেন আপিল বিভাগ। একই বছরের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে ওই রায়ের পর দশম ও ১১তম নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন আদালত। আর এ ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন আদালত। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালত তার রায়ে আরও বলেন, আপিল বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই আবেদনটি গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধনী) আইন ১৯৯৬ এই নির্দেশের পর থেকে অবৈধ ও সংবিধান বহির্ভূত ঘোষণা করা হলো। তবে আইনসম্মত না হলেও (প্রয়োজনের কারণে আইনসম্মত এবং জনগণের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন; সুপ্রাচীনকাল ধরে চলে আসা নীতিমালার ভিত্তিতে) দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করা ত্রয়োদশ সংশোধনীর আওতায়ই হতে পারে। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতিদের মধ্য থেকে অথবা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে একজনকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিধানটি বাতিল করার পূর্ণ স্বাধীনতাও সংসদের থাকবে। একইসঙ্গে ২০০৫ সালে এ প্রসঙ্গে দায়ের করা লিভ টু আপিলটিও খারিজ করা হলো বলে জানান আদালত। রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মামলার অন্যতম পিটিশনার আবদুল মান্নান খান বলেছিলেন, আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে দেশের গণতন্ত্রের ভীত আরও সুদৃঢ় হবে এবং বিচার বিভাগ আরও বেশি প্রভাবমুক্ত থাকতে পারবে। আপিলকারীর আইনজীবী এমআই ফারুকী বলেছিলেন, আপিল বিভাগে এ রায়ের ফলে আমরা সংবিধান রক্ষা করতে পেরেছি। এটি সংবিধান, গণতন্ত্র ও জাতির জন্য খুবই ভালো হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা হলো সামরিক শাসনের আরেকটি রূপ। সামরিক শাসন আমলে যেমন সংবিধানের কিছু ধারা রহিত ও অকার্যকর রাখা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও তা করা হয়। বিশিষ্ট আইনজীবী ও এ মামলার আমিকাস কিউরি ড. এম জহির বলেছিলেন, সুন্দর রায় হয়েছে, আমি দীর্ঘদিন বলেছি, বিচারকদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখতে। এ রায়ে আমার কথাই অনেকটা প্রতিফলিত হয়েছে। এ রায় অনুযায়ী আগামী দশম ও একাদশ নির্বাচন হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আওতায়। কিন্তু বিচারকদের না জড়ানোর জন্য সংসদ সংশোধনী আনতে পারবে বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়। এদিকে গত বছরের ২৫ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করা রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ ব্যক্তি। বাকিরা হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট শরীফ ভূঁইয়া ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন রিভিউ আবেদন করেন। এরপর গত ১৬ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে আরেকটি রিভিউ আবেদন জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সর্বশেষ গত ২৩ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি রিভিউ আবেদন দায়ের করে। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল বিভাগে এ রিভিউ আবেদন দায়ের করেন বলে জানান দলটির আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। প্রসঙ্গত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিন জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ওই বছরের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০০৫ সালে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রিটকারীরা। আদালত এ মামলায় আট জন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ করে তাদের মতামত শোনেন। তাদের মধ্যে পাঁচ জন সরাসরি তত্ত্বাবধায়ক সরকার-ব্যবস্থার পক্ষে মত দেন। তারা হলেন- ড. কামাল হোসেন, টিএইচ খান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। অপর অ্যামিকাস কিউরি ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মত দেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ও ড. এম জহির তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের পক্ষে মত দিয়ে তাদের প্রস্তাব আদালতে তুলে ধরেন। এছাড়া তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে মত দেন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স